যশোরের সবচেয়ে বড় মুরগির খামার আফিল অ্যাগ্রো। এই খামারে রয়েছে ১৩ লাখ মুরগি। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগি ৬ লাখের বেশি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে প্রথম সাত দিনে ১ লাখ ৫৪ হাজার মুরগি মারা যায়। ব্যাপক এ মৃত্যু কমাতে একেকটি শেড থেকে ৪ হাজার করে মুরগি সরিয়ে নেওয়া হয়। যেখানে আগে ১৬ হাজার মুরগি রাখা হতো, সেখানে এখন রাখা হচ্ছে ১২ হাজার মুরগি। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তাতে মৃত্যুর হার কিছুটা কমলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আগে যেখানে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার মুরগি মারা গেছে, সেখানে দিনে ২ হাজার মুরগি মারা যাচ্ছে। তাতেও আমাদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’
শুধু বড় খামার নয়, প্রান্তিক পর্যায়ের খামারেও একই অবস্থা। জেলার সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের খামারি ফিরোজ হোসেন জানান, তাঁর খামারে সাড়ে ৪ হাজার মুরগির মধ্যে ৩৫০টি মুরগি মারা যাওয়ার পর তিনি সব মুরগি বিক্রি করে দেন। এখন নতুন করে আর মুরগি তুলছেন না। গরমের তীব্রতা কমলে আবারও ব্যবসায় নামবেন বলে জানান তিনি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১ হাজার ৫৩৫টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার ১ হাজার ২৯২, লেয়ার ৩৭ ও সোনালি মুরগির খামার রয়েছে ২০৬টি। গরমে সবচেয়ে বেশি মুরগি মারা যাচ্ছে ব্রয়লার খামারে। যদিও খামারিরা মৃত্যুর যে হিসাব দিচ্ছেন, তার সঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মিলছে না।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১২ দিনে যশোরে মাত্র সাড়ে ৬ হাজার মুরগি মারা গেছে। অথচ আফিল অ্যাগ্রোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের এক খামারেই সাত দিনে দেড় লাখের বেশি মুরগি মারা গেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে সব খামারেই কিছু মুরগি মারা যেতে পারে। কিন্তু আফিল অ্যাগ্রো খামারে পৌনে দুই লাখ মুরগি মারা যাওয়ার যে দাবি করা হচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত খামারে এত মুরগি মারা যাওয়ার কোনো কারণ নেই।