টেলিফোন নম্বরগুলোকে কপি করে তিনি তাজউদ্দীন আহমদকে দেন। তাজউদ্দীন আহমদ পরে কামাল সিদ্দিকীকে জানান যে টেলিফোন নম্বরগুলো কলকাতার আমেরিকান কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসের। ভারতীয়দের তদন্তে আরও জানা যায় খন্দকার মোশতাকের পক্ষে জহিরুল কাইয়ুম মার্কিন দূতাবাসে দেখা করতে যান।
আগস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায় সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের যে সভা অনুষ্ঠিত হবে, সে সভার জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর একান্ত সচিব কামাল সিদ্দিকী যাবেন কাগজপত্র নিয়ে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাঁর একান্ত সচিবের বিশ্বসভায় অংশগ্রহণের উপযুক্ত কাপড়চোপড়ের জন্য দেড় হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কামাল সিদ্দিকী এ টাকা তুলে তাঁর মন্ত্রীর জন্য পোশাক তৈরি করার ব্যবস্থা করেন এবং নিজে একটি স্যুট ও একজোড়া জুতা কেনেন। তারপর হঠাৎ খন্দকার মোশতাকের নিউইয়র্ক সফর বাতিল করা হয়। জানা যায়, ভারত সরকার টের পেয়েছিল খোন্দকার মোশতাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছেন। তাঁর শর্ত ছিল পাকিস্তান যদি শেখ মুজিবকে ছেড়ে দেয়, তাহলে শেখ মুজিব এসে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন এবং এক পাকিস্তানের কাঠামোতে সাংবিধানিক সমস্যার সমাধান করবেন। ভারত সরকার তাই খন্দকার মোশতাককে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট দিতে অস্বীকার করেন। কামাল সিদ্দিকীরও দেশের বাইরে যাওয়া হয়নি। শীতের সময়ে মাঝেমধ্যে বাইরে গেলে আমি কামাল সিদ্দিকীর কাছ থেকে নিউইয়র্কে যাওয়ার জন্য তৈরি করা তাঁর কোটটি ধার করতাম।