১৯৮৬
মহামূল্য সেই ছক্কা
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ছক্কাটা বোধ হয় এটিই। শারজায় অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনালে জয়ের জন্য শেষ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ৪ রান। চেতন শর্মার ফুল টসে ছক্কাই মেরে বসলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। ‘বড়ে মিয়াঁ’র ১১৪ বলে অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংসটিতেই পাকিস্তানের প্রথম কোনো বড় ট্রফি জয়। সবচেয়ে বিখ্যাত ছক্কা, সবচেয়ে দামি ছক্কাও। শুধু শারজাপ্রবাসী পাকিস্তানিরাই নয়, আরবের ধনাঢ্য শেখরাও নেমে পড়েছিলেন মিয়াঁদাদকে উপহার দেওয়ার প্রতিযোগিতায়।
তা উপহার পাওয়ার মতোই খেলেছিলেন মিয়াঁদাদ। বলতে গেলে একাই শোকস্তব্ধ করে দিয়েছিলেন ভারতের কোটি কোটি মানুষকে। প্রথম তিন ব্যাটসম্যান কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত (৭৫), সুনীল গাভাস্কার (৯২) ও দিলীপ ভেংসরকারের (৫০) হাফ সেঞ্চুরিতে ভারত করেছিল ২৪৫। ২১৫ রানে পাকিস্তানের সপ্তম উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ‘ম্যাচ শেষ’ বলেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। শুধু মিয়াঁদাদই বোধ হয় মানতে চাননি। শেষ ওভারে নবম উইকেট যখন পড়ল, জয় থেকে ৫ রান দূরে পাকিস্তান। শেষ ব্যাটসম্যান তৌসিফ আহমেদ একটি বলই খেললেন, সেটিতে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দিলেন মিয়াঁদাদকে। চেতন শর্মা ইয়র্কার করতে চেয়েছিলেন, হাত ফসকেই হোক অথবা মিয়াঁদাদ এগিয়ে দাঁড়ানোয় লেংথের গণ্ডগোলে, সেটি হয়ে গেল কোমর উচ্চতার ফুল টস। লেগ সাইডের দিকে ব্যাট চালিয়েই দু হাত তুলে উদ্যাপন করতে শুরু করলেন মিয়াঁদাদ।
মিয়াঁদাদের ওই ছক্কার তাত্পর্য শুধু একটা ট্রফি জয়েই শেষ হয়ে যায়নি। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট লড়াইয়ের ভবিষ্যত গতিপথও নির্দিষ্ট করে দেয় তা। এর আগ পর্যন্ত এই দ্বৈরথে অনেক এগিয়ে ছিল ভারত, এরপর থেকেই শুরু হয় পাকিস্তানের আধিপত্য। ওই ছক্কা যে ভারতকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে অনেক দিন!