রাঙ্গামাটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন পাঁচজন। এরমধ্যে কোটা সংস্কার ইস্যুতে ছাত্রলীগের ভূমিকায় ব্যথিত হয়ে চারজন এবং একজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৃজন দে ফেসবুক লেখেন, ‘বর্তমানে দেশের ন্যক্কারজনক অবস্থাতে আমি নিজেকে খুবই ক্ষুদ্র মনে করছি। আমি লজ্জিত, আমি দুঃখিত।… সজ্ঞানে, অনুশোচনা ও বিবেকের তাড়নায় এবং নিজের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি এবং সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। বিবেকের চেয়ে বড় কিছু এই দুনিয়াতে নাই।’
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রাঙ্গণ মল্লিক লেখেন, ‘আমি প্রাঙ্গণ মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম।’
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক কমল ত্রিপুরা লেখেন, ‘ভাবছিলাম ছাত্রলীগ হয়ে ছাত্রদের আর ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করবো। কিন্তু গতকাল নিজের প্রিয় ক্যাম্পাসের সঙ্গে যা হলো তা খুবই অপ্রত্যাশিত। তাই এই মুহূর্তে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ (সাংগঠনিক সম্পাদক) থেকে পদত্যাগ করলাম।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপ্ত দে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে লেখেন, ‘কিন্তু দিন শেষে যখন নিজের জুনিয়র, ব্যাচমেইট, সিনিয়রদের সেভ করতে গিয়ে সেই সংগঠনই বাঁশ দিয়ে মেরে মাথা ফাটায় দেয়, তখন আর কি বলার থাকে ‘ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে দীপ্ত আরও লেখেন, ‘বিষয়গুলো আমার বিবেককে আঘাত করছে, যা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।’
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুল হক লেখেন, ‘চলমান সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখে, এই মুহূর্তে আমি স্বেচ্ছায় ছাত্রলীগের কমিটির থেকে পদত্যাগ করলাম।’
তবে সহ-সভাপতি ক্যাচিংনু মারমা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন জানিয়ে লেখেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে তার পদত্যাগের কোনো সম্পর্ক নেই।’
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তন্ময় চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা মিছিল সমাবেশ করেছিল। আমি সেদিন ক্যাম্পাসে ছিলাম না। কিন্তু জেলা ও ওয়ার্ডের নেতারা এসে প্রতিরোধের চেষ্টা করে এবং পুলিশও আসে। সেখানে পাল্টাপাল্টি স্লোগান নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির শুরু হয়। মুখোমুখি হয় দুপক্ষ। কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। পদত্যাগ করা দীপ্ত দের মাথা ফেটে যায়। এসময়, তার মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে। ফলে তারা অভিমান করে পদত্যাগ করেছে। মোট ৬ জন পদত্যাগ করেছেন। এদের ৫ জন কোটার ইস্যুতে এবং অন্যজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন। আমরা তাদের সাথে কথা বলবো। আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।’
সাইফুল উদ্দীন/জেডএইচ/জিকেএস