নীলফামারীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৮জন আহত হয়েছেন। এসময় ভাঙচুর করা হয় সাতটি মোটরসাইকেল।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে শহরের চোরঙ্গি মোড়, পৌর বাজার, পিটিআই মোড় ও ডিসি অফিস চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই জেলা শহরের বিভিন্নস্থানে জড়ো হতে থাকে। পরে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি নিয়ে বাটার মোড় এলাকায় যাওয়ার সময় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা। এছাড়াও শহীদ মিনার এলাকায় ১০-১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ডিসি অফিসের গেট, চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় ট্রাফিক ব্ক্স ভাঙচুর ও ডিসির বাংলোতে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। এদিকে এসব ভাঙরের কিছুসময় পরেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের পিটিআই মোড়ে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তারা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় র্যাব ও বিজিবি। প্রায় ৩০ মিনিটের মতো চলে এ সংঘর্ষ। বর্তমানে শহরের অবস্থা থমথমে বিরাজ করছে।
আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ছাড়াও জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি সান্ত্বনা চক্রবর্তী, নিউজ২৪ টিভির প্রতিনিধি আব্দুর রশিদ শাহ ও ফটো সাংবাদিক সাদ্দাম আলী রয়েছেন।
নীলফামারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান জাগো নিউজকে জানান, নীলফামারীতে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। জামাত বিএনপি পরিকল্পিতভাবে কোমলমতি শিশুদের ব্যবহার করে এ তাণ্ডব চালায়। জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা, বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা ও সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে বলেন, ১৮জন চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন এখানে। এরমধ্যে একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ইব্রাহিম সুজন/আরএইচ/জিকেএস