দস্যুতার সরাসরি খরচ যত
দস্যুতার ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুইভাবেই খরচ বৃদ্ধি করে থাকে। এখন পর্যন্ত দস্যুতা নিয়ে সবচেয়ে বড় সমীক্ষা হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই সময় বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থা (ইউএনওডিসি) এবং আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মেরিটাইম টাস্কফোর্স সম্মিলিতভাবে জলদস্যুতা নিয়ে সমীক্ষা করে।
‘পাইরেট ট্রেইলস’ শীর্ষক ওই সমীক্ষায় বলা হয়, ২০০৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১০ বছরে সোমালিয়া ও হর্ন অব আফ্রিকার উপকূলে ছিনতাই করা জাহাজের মুক্তিপণ বাবদ ৩৩ দশিমক ৯ কোটি থেকে ৪১ দশমিক ৩ কোটি ডলার মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছিল। এটি হলো প্রত্যক্ষ খরচ। অন্যদিকে পরোক্ষ খরচের মধ্যে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা ও দস্যুতা প্রতিরোধে নেওয়া আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
জলদস্যুতার শিকার বাংলাদেশি জাহাজে মুক্তিপণের প্রত্যক্ষ খরচও কম নয়। এখন পর্যন্ত দুটি জাহাজ দস্যুরা জিম্মি করেছিল। ২০১০ সালে এমভি জাহান মণি এবং চলতি বছর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি হওয়ার পর দুটিই মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনে জাহাজ দুটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, এমভি জাহান মণি জাহাজ চার মিলিয়ন (৪০ লাখ) ডলার এবং গত ১৪ এপ্রিল মুক্ত হওয়া এমভি আবদুল্লাহ ছাড়িয়ে আনতে ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) ডলার মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে। যদিও মালিকপক্ষ মুক্তিপণের অঙ্ক প্রকাশ করেনি।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি মুক্তিপণ ছাড়াও ৩৩ দিন কোনো পণ্য পরিবহন করতে পারেনি। প্রতিদিনের ভাড়া ১০ হাজার ডলার করে ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলারভাড়া আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অর্থাৎ এই অর্থ লোকসান হয়েছে কোম্পানির। যদিও বিমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতির অঙ্ক কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া গেলেও কোম্পানির ঘাড়েও পড়বে এই বাড়তি ব্যয়ের বোঝা।