ওমরাহ করার আগেই ইহরাম করতে হয়। যেদিন আপনার ফ্লাইট, সেদিন বিমানবন্দরে রওনার আগে শুধু নিয়ত বাদে বাকি সব কাজ সেরে ফেলতে হবে। বিশেষ এই কাজগুলো হলো:
• হাত ও পায়ের নখ ছোট করে কেটে ফেলুন।
• অপ্রয়োজনীয় লোম বা চুল পরিষ্কার করে নিন। গোঁফ ছোট করে ছেঁটে নিন (দাড়ি ছোট করার দরকার নেই)।
• অজু ও গোসল করুন।
• (শুধু পুরুষেরা) দাড়ি, মাথায়, শরীরে আতর লাগান (কাপড়ে নয়)।
• রিদা (ওপরের অংশ) ও ইজার (নিচের অংশ) পরিধান করুন।
নারীদের ইহরাম একটু ভিন্ন। নারীরা যেকোনো রঙের বা প্রকারের কাপড় পরতে পারেন। তবে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে যে কোনোভাবেই যেন এমন ধরনের কাপড় না পরা হয়, যেটিতে পর্দা নষ্ট হয় কিংবা শরীরের আকৃতি বেরিয়ে আসে। রাসুল (সা.) হজের সময় নারীদের মুখ ঢাকতে নিষেধ করেছেন এবং হাতে হাতমোজা পরতে বারণ করেছেন। পিরিয়ডকালে নারীদেরও ইহরাম ধারণ করতে বলা হয়েছে। তবে এ অবস্থায় তাঁরা যেন কোনো মসজিদে প্রবেশ না করেন।
ঢাকা থেকে মক্কার উদ্দেশে যাঁরা উড়োজাহাজে উঠেছেন, তাঁরা পাইলটের ঘোষণার অপেক্ষা করুন। ‘ইয়ালামলাম’ (মিকাত) আসার আগেই উড়োজাহাজের পাইলট ঘোষণা দিলে হজযাত্রীরা অজু করে ওমরাহর নিয়ত করে নিন। আর যাঁরা মদিনা থেকে মক্কায় আসছেন, তাঁরা ‘জুল হুলায়ফা’ মসজিদে (মিকাত) এসে ইহরাম ধারণ করে ওমরাহর নিয়ত করুন।
নিয়ত পড়ার বিষয় নয়, এটি হলো মনের সংকল্প। ঠিক যেমন আমরা নামাজের জন্য নিয়ত করে থাকি। তবে হজের ক্ষেত্রে নিয়ত পড়তে হবে। যেহেতু আপনি প্রথমে ওমরাহ করবেন, সেহেতু আপনি এখন ওমরাহর নিয়ত করে নিন:‘ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা উমরাতান’
অর্থ: হে আল্লাহ এই যে আমি, ওমরাহ করতে হাজির হয়েছি।
এই নিয়ত যেকোনো ওয়াক্তের নামাজের পর করা ভালো। রাসুল (সা.) জোহরের নামাজের পর নিয়ত করেছিলেন। আপনার ফ্লাইট বা ভ্রমণের ধরনের কারণে এই সময় জোহরের নামাজের ওয়াক্তের সময় না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে ইহরাম পরিপূর্ণ করার পর আপনি যেকোনো ওয়াক্তের নামাজ বা দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নিন। আপনি যদি উড়োজাহাজে থাকেন, তাহলে নিজের সিটে বসেই দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নিন।
এরপর বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করতে হবে। যত খুশি ততবার। পুরুষেরা জোর গলায় পড়বেন। আর নারীরা পড়বেন আস্তে আস্তে, যেন নিজে তাঁর পড়ার শব্দ শুনতে পান।
তালবিয়া: লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বায়িকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।
অর্থ: আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, এই যে আমি। আর তোমার কোনো শরিক নেই, আমি হাজির। সব প্রশংসা ও কর্তৃত্ব শুধু তোমারই, আর তোমার কোনো শরিক নেই।