এখন বারবার মনে পড়ছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদের কথা। কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি নিহত হয়েছেন। প্রথম আলো অনলাইনের খবর: সাঈদের বাড়িতে তখন শোকার্ত মানুষের ভিড়।
মা মনোয়ারা বেগম মাটি চাপড়ে আহাজারি করে বলছিলেন, ‘মোর বাবাটাক পুলিশ গুলি করিয়া মারল ক্যান? ও তো কাউকে মারতে যায় নাই। চাকরি চাওয়াটা কি অপরাধ? অই পুলিশ, তুই মোকে গুলি করিয়া মারলু না ক্যান? বাবাটাক না মারিয়া পঙ্গু করি থুইলেও তো দেখপের পানু হয়।’
মনোয়ারা বেগম আহাজারি করে বলেন, ‘সারাটা জেবন কষ্ট করনো। মজুর করিয়া একটা ছইলোক পড়াইনো। আশায় আছনু, বাবাটা (সাঈদ) চাকরি করলে শ্যাষ বয়সোত শান্তিমতো খামো। আশা-ভরসা সউগ শ্যাষ হয়া গেল। হামরা কেঙ্কা করি চলমো?’ (১৭ জুলাই, ২০২৪)
নিহত আবু সাঈদের পরিবার হতদরিদ্র। ৯ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম ছিলেন সাঈদ। তিনি রংপুরে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজে চলতেন, বৃদ্ধ মা-বাবাও চালাতেন। তাঁর উদ্যোগে এলাকায় গড়ে উঠেছে, ‘বাবনপুর স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সদস্যরা মাসিক চাঁদা দিয়ে এলাকার গরিব-দুঃখী মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ান।
আর কোনো মনোয়ারা বেগমের বুক যেন খালি না হয়।
খুব দেরি না করে কোটা সংস্কারের ঘোষণা দিন। কমিটি করে দিন। উত্তেজনার মুহূর্তে এতটুকুই বলি। এরপর আরেকটু ভালো সময়ে আমাদের বিবেচনা করতে হবে, কেন মাত্র তিন হাজার পদের জন্য চার লাখ প্রার্থী হন্যে হয়ে গেল এবং কেন তরুণ-কিশোরেরা এত ক্ষুব্ধ, এত মরিয়া হলো?