Home Defence শাফিনের মৃত্যুর খবরে আমার কলিজা ছিঁড়ে গেছে মনে হয়েছে: হামিন আহমেদ

শাফিনের মৃত্যুর খবরে আমার কলিজা ছিঁড়ে গেছে মনে হয়েছে: হামিন আহমেদ

76
0
শাফিনের মৃত্যুর খবরে আমার কলিজা ছিঁড়ে গেছে মনে হয়েছে: হামিন আহমেদ

মাইলসের ৪০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানে গাইছিলেন শাফিন আহমেদ
ছবি: প্রথম আলো

হামিন আহমেদ : ভোকালিস্ট হিসেবে এখানে একটা কথা বলতে চাই, মানুষের কাছে ওর যে গ্রহণযোগ্যতা, যেভাবে মানুষ তাঁকে গ্রহণ করছে—সেটাই হচ্ছে শাফিনের সাফল্য ও যোগ্যতার আসল মাপকাঠি। বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিক যাত্রায় যখন বিভিন্ন ব্যান্ড বিভিন্ন কাজ করছে এবং মাইলস যখন ‘প্রতিশ্রুতি’ অ্যালবাম প্রকাশ করল, গানগুলোর সৃষ্টি যে রকম সুন্দর ছিল, একইভাবে তখনকার ব্যান্ড মিউজিকে গায়কির ক্ষেত্রে যে জায়গাটা ছিল, অন্যরা যে জায়গায় ছিল, শাফিন সেখানে একটা অন্য একটা মাত্রা এনে দিয়েছিল। ‘প্রতিশ্রুতি’ তো তখন দাবানলের মতো জ্বলে উঠল। কেন? গানের কম্পোজিশন তো বটেই, শাফিনের কণ্ঠটাও একটা ব্যাপার ছিল। আমারও কিছু গান ছিল, কিন্তু ওর গলায় যেভাবে ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘জাদু’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’—অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে, তা কারও পক্ষে সম্ভব ছিল না। কাউকে ছোট করছি না, বাস্তবতা থেকে বলছি—এখনকার কেউ যদি সেই ১৯৯১ সালের ‘প্রতিশ্রুতি’ রিলিজের সময় আরও যত গান রিলিজ হয়েছিল, সব একবার শোনে। এরপর ‘প্রতিশ্রুতি’ শোনে, তাহলে সে পার্থক্যটা বুঝতে পারবে। পার্টিকুলারলি শাফিনের কথায় আসি, গান গাওয়ার ক্ষেত্রে ওর যে গায়কি, ডেলিভারি ও গলার টোন—তা মানুষকে একদম পাগল করে দিয়েছিল। ‘প্রতিশ্রুতি’, ‘প্রত্যাশা’, ‘প্রত্যয়’ অ্যালবামের সময়টা যারা দেখেছে শুধু তারাই এটা বুঝবে। এখন যদি বলতে হয়, দেখা গেছে, স্টুডিওতে আজকে ও কণ্ঠ দিচ্ছে, কালকে আমি দিচ্ছি। এরপর প্যানেলে এসে যখন শাফিনের গানটা শুনতাম, বুঝতাম যে ওর গায়কি কত সুন্দর। কত মাপা। কোন জায়গাটা ছাড়তে হবে, কোন জায়গাটা ধরতে হবে। গান গাওয়াটা শুধু তো সুর আর ছন্দ নয়—এটা মানুষ অনেক সময় বোঝেও না, এর বাইরেও অনেক ব্যাপার আছে। এই ব্যাপার ওর মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রেই ছিল। কতটুকু ছাড়তে হবে, কতটুকু ধরতে হবে, কোন জায়গায় কোন অভিব্যক্তি দিতে হবে—এগুলোর একটা চমৎকার কম্বিনেশন হচ্ছে শাফিনের কণ্ঠ এবং গায়কি। আমি বলতামও, খুব ভালো গাইছিস। অবশ্যই গর্বিত হতাম, অনেক বেশি। প্রত্যেক মেম্বারই গর্বিত ছিলাম। ছিলাম বলেই মাইলসে ওর আসা-যাওয়া এভাবে ছিল, যখন লন্ডন চলে গেল, আবার ফিরে এল, আমাদের মনে হয়নি, সে ফিরে আসছে। আমরা ভাবতাম, সে তো আসলে মাইলসে ছিল, মাইলসে আছে—সে তো বাইরের কেউ না। আমাদের সবার আরেকটা বিশেষত্ব ছিল যে সবার সংগীতের যাত্রা এবং পরিচয় প্রধানত মাইলস। আমরা তরুণ বয়স থেকেই যেহেতু মাইলসের সঙ্গে। সুতরাং আমাদের পুরো মিউজিক্যাল গ্রোথ হয়েছে মাইলস থেকেই। এ জন্য অনেককে বলে না, মাইলস হচ্ছে পরিপূর্ণ একটা ব্যান্ড। এটা বলার অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটা একটা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here