14.2 C
New York

শহরের তুলনায় গ্রাম ও শিল্পাঞ্চলে লোডশেডিং বাড়ছে: জিএম কাদের

Published:

শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে, এমনকি শিল্পাঞ্চলেও লোডশেডিং বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

বৃহস্পতিবার (০৯ মে) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে তেমন কোনো ঘাটতি হয়নি। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে, এমনকি শিল্পাঞ্চলেও লোডশেডিং বাড়ছে। এ কারণে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে যখন সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল, তখন সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।

বিদ্যুৎ পরিস্থিতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, আমাদের চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট। প্রয়োজনের বেশি ১০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে আছে। এই ১০/১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি পিডিবির কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচনায় আসেনি।

সংকট পরিস্থিতিতে সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য এই অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ বেসরকারিখাতে অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি মালীকানাধীন কেন্দ্র কখনো বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি বা বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও এর পরিমাণ তাদের সক্ষমতার এক থেকে দুই শতাংশ। অর্থাৎ কেন্দ্রগুলো অধিকাংশ সময়েই উৎপাদন বিহীন অলস সময় পার করেছে।

বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাড়িয়েছে সরকারি হিসাবে ২৭ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সম্প্রতি তাপপ্রবাহের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট উৎপাদন রেকর্ড করা হয়েছে। প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অলস বসে আছে। ওই সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে উৎপাদন ছাড়াই ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হচ্ছে। যদিও তাদের উৎপাদন সক্ষমতা ব্যবহার অনেক সময়ে জরুরি ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে, সেটি করা হয়নি। এর অনেকগুলো সচল ছিল না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আরইবি। লোডশেডিংয়ে ভূগছে মূলত এ সংস্থার গ্রাহকেরা। মোট বিদ্যুৎ গ্রাহকের ৫৫ শতাংশই এ সংস্থার। তীব্র তাপপ্রবাহের সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং ভোগ করেছে। কোনো কোনো এলাকায় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। তিনি বলেন, শিল্পকারখানায় লোডশেডিং না করার জন্য সরকারের নির্দেশনা থাকলেও তা পুরোপুরি মানা সম্ভব হচ্ছে না। গাজীপুরের একটি কারখানায় জেনারেটর চালু রাখলে আগে মাসে ১৫ লাখ টাকার ডিজেল লাগতো, এখন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা লাগছে।

বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ২০১০ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলার কথা বলে ২ বছরের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দ্রুত সরর্বরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন করা হয়। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর কারণে ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইনটি কার্যকর থাকবে। যে আইনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ আইনের আওতায় বিনা দরপত্রে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ ক্রয়, দফায় দফায় অতিরিক্ত মূল্যে চুক্তি নবায়ন, অতি উচ্চমূল্যের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি, বিনা দরপত্রে গ্যাস-বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ, অবকাঠামো নির্মাণ করার সুযোগ দেওয়া হয়, যা আমাদের অর্থনীতিসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আইএইচআর/এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

Related articles

Recent articles

spot_img