শিয়া মুসলিমদের একটি শাখা জাইদিজম। এই শাখার প্রতিনিধিত্ব করেন হুতিরা। একসময় গোষ্ঠীটি ইয়েমেন শাসন করত। তবে ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের সময় থেকে তারা দেশটিতে সুন্নি শাসনের অধীনে কোণঠাসা হয়েছে। ২০১৪ সালে হুতিরা এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটায়। এর জেরে ইয়েমেনে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ফলে আবার শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। জাতিসংঘের হিসাবে ওই গৃহযুদ্ধে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ আনুমানিক ৩ লাখ ৭৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভিটামাটি ছেড়েছেন ৪০ লাখ মানুষ।
হুতিরাই বস্তুত ওই যুদ্ধে জয় পেয়েছিল। ২০২২ সালের এপ্রিলে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর যুদ্ধে সহিসংতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছিল। গত বছরের অক্টোবরে চুক্তির মেয়াদ শেষে হলেও লড়াই বলতে গেলে তেমন আর হচ্ছে না। বর্তমানে বেশির ভাগ ইয়েমেনি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোয় বসবাস করেন। দেশটির উত্তরের বেশির ভাগ অঞ্চল দখলে রেখেছেন হুতিরা। ইয়েমেনে লোহিত সাগরের উপকূলও তাদের নিয়ন্ত্রণে।
সৌদি আরবের সঙ্গে দীর্ঘদিনের শত্রুতা ইরানের। মূলত এ কারণেই হুতিদের সমর্থন দিয়ে আসছে তেহরান। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ করা গোয়েন্দা তথ্যে জানানো হয়েছে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতিদের হামলায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ইরানের। বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এসব হামলার পর নিজ দেশে জনসমর্থন বেড়েছে হুতিদের। তাঁরা এটাও বিশ্বাস করেন যে লোহিত সাগরে হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হুতিরা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন।
বর্তমানে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টায় রয়েছে সৌদি আরব। ইয়েমনের উত্তরে হুতিদের নিয়ন্ত্রণের স্বীকৃতি দিতে একটি শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টাও চালাচ্ছে তারা। তবে রিয়াদের শঙ্কা, হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নিলে ইয়েমেন থেকে সৌদি সেনাদের ফিরিয়ে নেওয়াটা জটিল হয়ে পড়তে পারে।