একটি শহর কেন ‘তাপ দ্বীপে’ পরিণত হয়
গাছপালা ও জলাধারসমৃদ্ধ প্রাকৃতিক ভূমি-আবরণবিশিষ্ট একটি অঞ্চলকে যখন শহরে রূপান্তরিত করা হয়, তখন সেই শহরে ইট-পাথরের আবরণ দেওয়া হয়। মাটি বা ভূমির ওপর ফুটপাত, রাস্তা, বহুতল ভবনসহ বহু ধরনের স্থাপনা ও অবকাঠামো তৈরি করা হয়। যখন মাটি বা ভূমি এ ধরনের স্থাপনা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়, তা অধিক তাপ শোষণ করে এবং ধরে রাখে। এতে করে সেই অঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
এ জন্য নগরবিজ্ঞানে একটি শহরে ন্যূনতম কিছু অংশ প্রাকৃতিক আবরণ তথা সবুজ বনায়ন নিশ্চিত করতে বলা হয়ে থাকে। সে হিসাবে একটি শহরের জন্য কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সবুজ জায়গা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু কাগজে-কলমে ঢাকায় এটি আছে মাত্র ৮ শতাংশের মতো। বাস্তবে কতটুকু, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
জলাভূমিও তাপমাত্রা কম থাকার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। কক্সবাজারে গেলে দেখা যায়, ঢাকার তুলনায় শীতে গরম আর গরমে ঠান্ডা। আবহাওয়া সমভাবাপন্ন রাখতে পানিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
ঢাকার জলাভূমি সব ভরাট। খোলা জায়গা তথা খেলার মাঠ তো নাই বললেই চলে। বিএনবিসি’তে বাড়ি নির্মাণে খোলা জায়গা রাখার নিয়ম আছে। এটা এই কারণে যে এই খোলা অংশ প্রাকৃতিক আবরণ তথা গাছগাছালি পূর্ণ হবে। খোলা জায়গা দিয়ে মাটিতে পানি প্রবেশ করে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধীরে ধীরে ভরাট করবে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, গাড়ির গ্যারেজ, কেয়ারটেকার কিংবা দারোয়ানের থাকার জন্য সেটি স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক ভূমিরূপ আসলে কিছুই থাকে না।