যুবক বাড়ি এলেন। আতিথেয়তা গ্রহণ করলেন। পানাহার শেষে শোয়াইব (আ.) যে প্রস্তাব দিলেন, তার জন্য যুবক একবারেই অপ্রস্তুত ছিলেন। সেই ঘটনা কোরআনে বর্ণনা হয়েছে এভাবে, ‘স্ত্রীলোক দুটির একজন বলল, হে পিতা, পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তাকে নিযুক্ত করুন, আপনি যাদের মজুর নিযুক্ত করবেন, তাদের মধ্যে উত্তম যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত। আমার এ দুই মেয়ের একজনকে তোমার কাছে বিয়ে দিতে চাই। এ শর্তে যে তোমাকে আমার এখানে আট বছর চাকরি করতে হবে। আর যদি ১০ বছর পূর্ণ করো, তাহলে তা তোমার ইচ্ছা।…মুসা (আ.) জবাবে বললেন, আমার ও আপনার মধ্যে এ কথা ঠিক হয়ে গেল…।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ২৬-২৮)
যুবক ছিলেন বনি ইসরায়েল জাতির প্রতি প্রেরিত আল্লাহর বিশেষ নবী মুসা (আ.)। মুসা জন্মেছেন মিসরে। তখন মিসরের ফেরাউন বা বাদশাহ ছিল কাবুস। দ্বিতীয় রামেসিস হিসেবে লোকে জানে তাকে। মুসা ছিলেন ইসরায়েলি। সে সময় ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ফেরাউন বনি ইসরায়েলের পুত্রসন্তানদের হত্যা করত। এর মধ্যে মুসা (আ.)-এর জন্ম হয়। মা তাঁকে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। আল্লাহর কুদরতে ফেরাউনের ঘরেই বিশেষ যত্নে বেড়ে উঠতে থাকেন মুসা।
মুসা তখন যুবক। বাজারে গেলেন কাজে। দেখলেন, দুই ব্যক্তি ঝগড়া করছে। একজন ফেরাউনের অনুসারী কিবতি, অন্যজন ইসরায়েলি। মুসা মীমাংসা করে দিতে চাইলেন। কিন্তু কিবতি তার কথা শুনছিল না। সে বাড়াবাড়ি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে লাগল। মুসা রাগে কিবতির গালে চড় বসিয়ে দিলেন। লোকটি মারা পড়ল।
বিদ্যুৎ গতিতে মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। ফেরাউনের রাজ্যে তার অনুসারীকে হত্যা! রাজ্য থেকে সিদ্ধান্ত এল, মুসাকেও হত্যা করা হোক। মুসাকে খোঁজা শুরু হলো। মুসার এক শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁকে বললেন, আপনি শহর ছেড়ে দেন। মাদায়েন চলে যান। সেখানে এক বুজুর্গ ও সৎ ব্যক্তি আছেন, তার সংস্রবে থাকতে পারবেন। (কাসাসুল কোরআন, খণ্ড ৪, পৃ ১৫)