পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশের সব পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা খুবই অপ্রতুল। আমাদের শিক্ষকেরাও চান আর দশজন পেশাজীবীর মতো তাঁরাও যেন ভালো বেতন পান। তাঁরা দেখেন, তাঁদের চোখের সামনেই একজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী, একজন প্রশাসক কিংবা একজন ব্যাংকার উচ্চমানের বেতন পাচ্ছেন। অথচ তাঁরা নিজেরাই এই সব প্রকৌশলী, চিকিৎসক, প্রশাসক কিংবা ব্যাংকার তৈরির কারিগর হয়েও তাঁদের তুলনায় কম বেতন পাচ্ছেন! এসব দেখতে কার না খারাপ লাগে? তাই যেসব শিক্ষকের সুযোগ থাকে চাকরি পরিবর্তন করার, তাঁরা ‘শিক্ষকতা’ নামক মহান পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যান।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত শেষ পে–স্কেল অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীদের তালিকায় শিক্ষকদের মধ্যে আছেন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আর বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকেরা।
প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীদের এই তালিকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকেরা নেই। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা বিসিএস ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকেরা প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবী হলেও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গ্রেডে (প্রথম গ্রেড) উন্নীত হওয়ার সুযোগ তাঁদের জন্য অনেকটাই সীমিত। অথচ পুলিশ, প্রশাসন বা কর কর্মকর্তাদের অনেকেই প্রথম গ্রেডের বেতন পান, যা শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের শামিল।
শিক্ষকদের এত কম বেতন আর এমন মানবেতর জীবন বিশ্বের উন্নত কোনো দেশে দেখা যায় না। আমরা যদি ইউরোপের উন্নত দেশ ফিনল্যান্ডের দিকে তাকাই, তাহলে দেখা যাবে যে সেখানকার শিক্ষকদের বেতন অন্যদের চেয়ে বেশি এবং শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা সেখানে সর্বোচ্চ। বেতন ও সামাজিক মর্যাদা সর্বোচ্চ হওয়ায় সে দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আসেন।