আবার সামগ্রিক আয়তনের ক্ষেত্রে ছবিটা অন্য রকম। জাতিসংঘের পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ ভারতের জনসংখ্যা হবে ১৬৭ কোটি, যখন চীনেরটা হবে ১৩২ কোটি আর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮ কোটি। চার গুণ বেশি জনসংখ্যা নিয়ে ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমান আকারের অর্থনীতি হওয়া কঠিন কিছু হবে না। এমনকি ভারত যদি ২০৪৭ পর্যন্ত বার্ষিক ৫ শতাংশ হারেও প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যা ১৯৯০-২০২৯ সময়ের বার্ষিক গড় হার ৬ দশমিক ৩০ শতাংশের নিচে, তাহলেও পিপিপির ভিত্তিতে ভারতের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের সমান হয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র এখনো প্রযুক্তিগতভাবে অনেক অগ্রসর এবং দেশটির উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি। ভারতের শিল্পোৎপাদনের সক্ষমতাও চীনের সমকক্ষ হওয়া থেকে অনেক দূরে। জিডিপিতে চীনের তুলনায় ভারতের শিল্প খাতের হিস্যা শুধু কমই নয়, বরং সম্প্রতি তা কমতে শুরু করেছে। তবে আকার একটা ব্যাপারও বটে। বিপুল জনগোষ্ঠী ও সুবিশাল অর্থনীতি নিয়ে ভারত একটি পরাশক্তি হবে, যা পুরোপুরি চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের সমপর্যায়ের হবে না, তবে প্রশ্নাতীতভাবে বিশাল শক্তি হয়ে উঠবে।
কী কারণে এই পরাশক্তি হয়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হতে পারে? একটি কারণ হতে পারে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি, যার কথা আইএমএফের চলতি বছর এপ্রিলের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে বলা হয়েছে।
চীনের অর্থনীতির নিম্নগতি, জনতাত্ত্বিক পরিবর্তনের উপাদানসহ এই কাঠামোগত শ্লথগতির প্রভাব ও মাত্রা খুব খারাপের দিক মোড় নিতে পারে ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদী নীতির কারণে, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। দীর্ঘ মেয়াদে জলবায়ুগত সংকট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে আর তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পারে জনকল্যাণকে।
পরাশক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধ বাধলে কী হবে, তা তো কল্পনাই করা যায় না। এ অবস্থায় অনেকেই আশাবাদী যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রজ্বলিত করবে। এই আশাবাদ প্রশ্নসাপেক্ষ।