ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। সূর্যের উঁকি, সঙ্গে পাখির কিচিরমিচির। কুয়াশাচ্ছন্ন জলাশয়ে চোখ মেললেই লাল শাপলার বুকে পাখির জলকেলি। দিগন্তজুড়ে তাদের বিচরণ। শীতে এমন চেনা দৃশ্যই ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসের জলাশয়গুলো ছিল পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম, যা এখন বিলুপ্তির পথে। নানা অব্যবস্থাপনায় পরিযায়ী পাখির জলকেলি কিংবা ওড়াউড়ির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এখন সহসা দেখা মেলে না।
বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন জায়গায় অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ, সময়মতো জলাশয় সংস্কার না করা, লেকের পাড়ে জনসমাগম এবং কোলাহল ক্যাম্পাসকে পাখির বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে। সাধারণত প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসা শুরু করে ক্যাম্পাসে। তবে বিগত দুই বছরে এ চিত্র ভিন্ন। জানুয়ারি মাসেও জলাশয়গুলোতে পাখির দেখা নেই। নেই আগের মতো পাখিদের কিচিরমিচির।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি শীতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরের পাশের জলাশয়, স্কুল অ্যান্ড কলেজের খেলার মাঠের পূর্ব পাশের জলাশয়, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারসংলগ্ন জলাশয়, নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের জলাশয় এবং বোটানিক্যাল গার্ডেনসংলগ্ন জলাশয়ে অতিথি পাখিতে পূর্ণ থাকত। দেশি–বিদেশি মিলিয়ে দুই শতাধিক পাখি দেখা যেত। কিন্তু গত দুই বছরে পাখি আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারসংলগ্ন জলাশয় ছাড়া কোনো জলাশয়ে পাখির দেখা নেই।