যুক্তরাজ্য সরকারের একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপিছু কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ যানবাহনের ধরনের ওপর নির্ভর করে। যেমন একজন যাত্রীপ্রতি কিলোমিটার ভ্রমণে ডিজেলচালিত ব্যক্তিগত গাড়ি ১৭১ গ্রাম, পেট্রলচালিত ব্যক্তিগত গাড়ি ১৭০ গ্রাম, মোটরসাইকেল ১৪৮ গ্রাম এবং লন্ডনের লোকাল বাস ৭৯ গ্রাম কার্বন নিঃসরণ করে।
বাংলাদেশে একজন যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, তার সঠিক তথ্য নেই। তবে এটি স্পষ্ট ধারণা করা যায় যে যন্ত্রচালিত যানবাহনে বাংলাদেশি একজন যাত্রীর প্রতি কিলোমিটারে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ যুক্তরাজ্যের একজন যাত্রীর চেয়ে বেশি হবে। কারণ, বাংলাদেশে যানবাহন এবং রাস্তা উভয়ের অবস্থাই যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত নয়। তা ছাড়া বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন সরকারি নির্গমনের মান (এমিশন স্ট্যান্ডার্ড) পূরণে ব্যর্থ। বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, ৭৮ শতাংশ মোটরসাইকেল এবং ৭৭ শতাংশ ডিজেলচালিত যানবাহন সরকারি নির্গমনের মান পূরণে ব্যর্থ।
বাংলাদেশের রিকশাচালকদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পরিমাপের জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনের লোকাল বাসের প্রতি কিলোমিটারে একজন যাত্রীর কার্বন ফুটপ্রিন্ট ভিত্তি হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। যদিও সঠিক তথ্য নেই, অনুমান করা হয় যে বাংলাদেশে প্রায় ২৫ লাখ প্যাডেল রিকশা রয়েছে। শুধু ঢাকাতেই পাঁচ থেকে ছয় লাখ প্যাডেল রিকশা রয়েছে।
প্রতিবছর হাজার হাজার লোক নদ-নদীর ভাঙন বা প্রাকৃতিক ও সামজিক কারণে জমিজমা হারিয়ে জীবিকার তাগিদে শহরে এসে রিকশা চালাচ্ছেন। ২০১৭ সালে ঢাকা শহরে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, রিকশাচালকেরা দিনে গড়ে ১১ দশমিক ৫৬ ঘণ্টা কাজ করেন, গড়ে প্রতিদিন ২৩টি ট্রিপ দেন ও ৩০ জন যাত্রী পরিবহন করেন এবং দৈনিক গড়ে ৪৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেন।