17.7 C
New York

নৌকার হার কি আওয়ামী লীগের হার নয়

Published:

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এখন এর ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসবে, নির্বাচনটি কেমন হলো? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। জনগণ হরতাল আহ্বানকারীদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বিরোধী দল বিএনপি বলছে, এই নির্বাচন ভোটাররা নাকচ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের দাবি, তারা দেশবাসীকে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিয়েছে।

এদের সবার দাবির মধ্যে যেমন সত্য আছে, তেমনি আছে সত্যের ঘাটতিও। যেকোনো বিষয়কে ইতি ও নেতি—দুভাবেই দেখা যায়। কেউ বলেন, গ্লাসের অর্ধেক খালি, কেউ বলেন, অর্ধেক পূর্ণ। সমস্যা হলো অর্ধেক পূর্ণ বা খালি কেউ স্বীকার করতে চান না। সবাই যখন গ্লাস পূর্ণ করার দাবি করেন, তখন সেটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। নির্বাচনী রাজনীতিতে গ্লাসটি হলো ‘জনগণ’।

গণতন্ত্র হলো একসঙ্গে চলা। গণতন্ত্র হলো একসঙ্গে কাজ করা। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব একসঙ্গে চলতে বা কাজ করতে ইচ্ছুক নন। নব্বইয়ে স্বৈরাচারের পতনের পর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টেকসই হওয়ার কথা ছিল। আন্দোলনে জয়ী আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য দল মিলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি রূপরেখাও প্রণয়ন করেছিল। ক্ষমতায় এসে তারা সেটি ভুলে যায়। এক দল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে সখ্য করে, আরেক দল স্বৈরাচারের সঙ্গে হাত মেলায়।

একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ধ্বংসের নালিশ জানায়। এই নালিশ কেবল দেশের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকে না, বহির্বিশ্বেও জানিয়ে দেওয়া হয়। বিরোধী দলে থাকতে গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য যারা বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ করে বেড়ান, ক্ষমতায় গিয়ে তাঁরাই বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বুলন্দ আওয়াজ তোলেন।

Related articles

Recent articles

spot_img