15.6 C
New York

নারীকে নিয়ে চরম আপত্তিকর এসব মন্তব্য পড়লে অসুস্থ বোধ হয়

Published:

প্রশ্ন হলো, নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা কেন বাড়ছে? কেন এত ক্রোধ আর প্রতিহিংসা নারীর প্রতি? অথচ পৃথিবীর ইতিহাস বলে, পুরুষের তুলনায় নারী অনেক বেশি শান্তিপ্রিয় ও কম অপরাধপ্রবণ। অপরাধ কম করেও অপরাধের শিকার হচ্ছেন নারী। যে মাতৃগর্ভে প্রতিটি পুরুষের উৎপত্তি, সেই পুরুষ কী করে নারীর প্রতি এতটা সহিংস আচরণ করতে পারেন, তা ভাবতেই অবাক লাগে। নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার পেছনে যে কারণগুলো প্রধান বলে আমার মনে হয়, তা হলো:

১. আজকের শিক্ষিত ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারীর পরিবর্তিত নতুন রূপটি মেনে নিতে পুরুষ এখনো তৈরি নন। ফলে তাঁরা নারীকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন, হীনম্মন্যতায় ভুগছেন এবং নারীর অবস্থান নড়বড়ে করতে তাঁরা সব ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। ফলে দ্বন্দ্ব আর সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠছে।

২. সমাজে এত দিন ধরে ভোগ করতে থাকা পুরুষের সুবিধাজনক অবস্থানটি নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে তাঁরা সহিংস হয়ে উঠছেন। এত দিন প্রভুর আসনে আসীন পুরুষ নারীর সম–অবস্থানে থাকার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। ফলে তাঁরা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছেন।

৩. পুরুষের সামাজিকীকরণের প্রক্রিয়া ও সমাজে পুরুষের প্রচলিত রূপটি তাঁকে নারীর প্রতি সহিংস, কর্তৃত্ববাদী ও আধিপত্যবাদী করে তুলছে। পুরুষ হয়ে ওঠার সামাজিক চাপ শুধু নারী নন, পুরুষকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

৪. আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মিডিয়া নারীকে যেভাবে চিত্রায়িত করেছে যুগের পর যুগ, সেটিও নারীকে অবদমন করেছে এবং নারীর প্রতি সহিংস ও কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠতে উদ্বুদ্ধ করেছে পুরুষকে।

৫. নারীর প্রতি ঘটে যাওয়া অন্যায় আর অবিচারের বিপরীতে শাস্তির উদাহরণ প্রায় নেই বললেই চলে। ২০০২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আসা মামলা বিশ্লেষণ করে ২০১৮ সালে প্রথম আলো দেখিয়েছিল, সাজা হয় মাত্র ৩ শতাংশ মামলায়, যা প্রায় না হওয়ারই শামিল। সর্বোপরি একে তো আইনের প্রয়োগে দুর্বলতা আছে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনগুলোও নারীকে পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারেনি। তাই আইনগুলোর সংস্কারও জরুরি।

Related articles

Recent articles

spot_img