16.9 C
New York

দাম না পাওয়ায় কষ্টের ফসল নষ্ট হচ্ছে জমিতেই

Published:

গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টমেটো। টমেটোর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। কিন্তু সেই টমেটো তুলতে আগ্রহ নেই কৃষকের। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টমেটো। শুধু টমেটোই নয়, অন্য সবজিরও চাহিদানুপাতিক দাম না পাওয়ায় ক্ষেতের মধ্যেই পচন ধরেছে। এমন চিত্র দেখা গেল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

স্থানীয়রা বলছেন, গরমের কারণে জমিতে পচে যাচ্ছে টমেটো। এ ছাড়া দরপতনের কারণেও টমেটো তুলতে আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। এক মণ টমেটো বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায়, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বাজারজাত করতে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।

দাম না পাওয়ায় কষ্টের ফসল নষ্ট হচ্ছে জমিতেই

কৃষকদের দাবি, সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যে ১২ মাস বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদিত সবজি সরবরাহ হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। দেশের সবজি চাহিদা মেটাতে অবদান রাখছেন সীতাকুণ্ডের কৃষকেরা। কৃষিখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা বা সংরক্ষণাগার থাকলে এ ক্ষতি এড়ানো যেত।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ শুধু সবজি ক্ষেত। যেখানে টমেটো, বরবটি, করলা, লাউ, ঢ্যাঁড়শ ইত্যাদি। জমিতে ফলন ভালো হলেও দাম না পেয়ে হতাশা চাষিরা। প্রতি বছর সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যে বারৈয়ারঢালা, সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সবজি চাষ হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন হয় টমেটোর।

সৈয়দপুর ইউনিয়নের কৃষক নুরুল আবছার বলেন, ‘আমি প্রায় ১৫০ শতক টমেটো চাষ করেছি। ধার-দেনা করে চাষ করতে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু বিক্রি করে যে টাকা পাচ্ছি, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বাজারজাত করতে। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা করে।’

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একশ শতকের মতো টমেটো চাষ করেছি। তাতে প্রায় খরচ হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। ৩ মণ টমেটো বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হয় ১২০০-১৩০০ টাকা। বাজারজাত করতে খরচ হয় তার চেয়ে বেশি। এ ছাড়া অন্য সবজির দামও অনেক কম।’

কৃষক টিটু চৌধুরী বলেন, ‘প্রথমদিকে কিছুটা দাম পেলেও মাঝখানে টমেটোর দাম পড়ে গেছে। কৃষকেরা এখন আর ক্ষেত থেকে টমেটো তুলছেন না। টমেটো তুলতে যে খরচ হয়, বিক্রি করতে হয় তার অর্ধেক দামে। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।’

দাম না পাওয়ায় কষ্টের ফসল নষ্ট হচ্ছে জমিতেই

সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিব উল্ল্যাহ বলেন, ‘তীব্র গরমে টমেটো দ্রুত পেকে যায়। যদি টমেটো প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা থাকত বা সংরক্ষণের জন্য হিমাগার থাকত, তাহলে টমেটো নষ্ট হতো না। টমেটোর পাশাপাশি অন্য সবজির দাম চাহিদানুযায়ী না পাওয়ায় কৃষকেরা হতাশায় আছেন।’

তিনি বলেন, ‘লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক সবজি চাষে ঝুঁকেছেন। কিন্তু এবার ভালো দাম না পাওয়ায় উৎপাদন খরচ না ওঠায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এজন্য ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বহু কষ্ট ও অর্থব্যয়ে চাষ করা বিভিন্ন সবজি।’

এম মাঈন উদ্দিন/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

Related articles

Recent articles

spot_img