14.7 C
New York

তেমাথায় বসা মা-মেয়ে, চড়া সুদে ঋণ ও কর্মজীবী নারীর আক্ষেপ

Published:

সিচা মণ্ডলপাড়া থেকে লালচামারের মেলা যাওয়ার পথে দেখা আঞ্জুয়ারা বেগমের সঙ্গে। তখন তিনি মেলা থেকে গ্রামের পথ ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন।

আঞ্জুয়ারার হাতে একটি মাটির রং করা ডগা। তাতে মলা, বুন্দিয়া ও সাজ-বাতাসা রাখা। আঞ্জুয়ারা সঙ্গে কথা বলছি, এমন সময় পাশে দাঁড়িয়ে এক নারী বললেন, ‘টসাগো’। বোঝা গেল, আঞ্জুয়ারা শ্রবণপ্রতিবন্ধী।

ফাতেমা বেগম নামের ওই নারীর সাহায্য নিয়ে জানা গেল, আঞ্জুয়ারা মাটির রং করা ডগা কিনেছেন ৬০ টাকা দিয়ে। আঞ্জুয়ারার অস্পষ্ট কণ্ঠে শোনা গেল, ‘মলা আছে না, তাক নিছে ৪০ টাকা। বুন্দিয়া ১০ টাকা, বাতাসা ৪০ টাকা।’ ‘কেটা খাইবো’—ফাতেমার প্রশ্নের উত্তরে আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘আব্বা আছে।’

বাবার প্রতি শ্রবণপ্রতিবন্ধী আঞ্জুয়ারার ভালোবাসা হৃদয় ছুঁয়ে গেল। টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে ঈদে ফিতরা তোলার কথা বললেন।

প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম জানান, আঞ্জুয়ারার ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু তাঁর স্বামী সংসার করেননি আঞ্জুয়ারা শ্রবণপ্রতিবন্ধী বলে। আঞ্জুয়ারা বাবার বাড়িতে থাকেন, তাঁর বাবা ছক্কু মিয়া থাকেন অন্যের জায়গায়, হাশেম চেয়ারম্যানের জমিতে।
আঞ্জুয়ারা অবশ্য বলেন, ‘ওই কলাগাছটা আছে না, তার দক্ষিণ পাশে বাড়ি।’

‘বাপ বুড়া মানুষ, অসুস্থ। হামরা বাড়িত থাকি। কাম করতে পারি না। শরীর দুর্বল। মাও (মা) ছোটতে মরছে, ’ বলতে বলতে আঞ্জুয়ারা চলে গেলেন।

তখন বেলা তিনটার কাছাকাছি, লালচামার গ্রামে পৌঁছে দেখি মেলা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়। হাতে হাতে মাছ, সাজ-বাতাসা, শিশুদের খেলনা ইত্যাদি। ভিড় ঠেলে মেলাবাড়িতে পৌঁছে কিছু দোকান দেখা গেল।

রংপুরের মিঠাপুকুরের রহমতপুর গ্রামের লাল মিয়া খেজুরের রস ও খেজুর নিয়ে এসেছিলেন মেলায় বিক্রি করতে। হতাশা নিয়ে বললেন, বেচাবিক্রি কম। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা হবে। একটু পর এখান থেকে শোভাগঞ্জের মেলায় যাবেন।

Related articles

Recent articles

spot_img