গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৯ সালে ঢাকা শহরে সমৃদ্ধ বৃক্ষে আচ্ছাদিত এলাকা ছিল মোট ভূখণ্ডের ১৭ শতাংশ, যা এখন মাত্র ২ শতাংশ। এ অংশ আবার মাত্র চারটি এলাকায় সীমাবদ্ধ। প্রথমটি বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা এবং পুরোনো বিমানবন্দর। দ্বিতীয়টি, সংসদ ভবন ও গণভবন। তৃতীয়টি, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হেয়ার রোড, গুলিস্তান পার্ক, ওসমানী উদ্যান ও বঙ্গভবন। চতুর্থটি, পূর্বাচল নতুন শহর এলাকা। এর বাইরে ছোট কিছু পার্ক ও আবাসিক এলাকায় গাছপালা রয়েছে। শহরের বাকি এলাকায় গাছপালা খুব কম।
সমৃদ্ধ বৃক্ষ–আচ্ছাদিত এলাকা বলতে এমন সব স্থান বোঝানো হয়েছে, যেখানে উঁচু গাছ, লতাগুল্ম, ঘাস ও নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাসের উপযোগী আবহাওয়া রয়েছে। যেমন ঢাকার অনেক এলাকা খালি পড়ে থাকাকালে সেখানে ঘাস ও লতাগুল্ম জন্মে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব স্থানও দ্রুত আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়। তবে গাছ লাগানো, ছাদবাগান করাসহ নানাভাবে ওই ৩০ বছরে ঢাকার আবাসিক এলাকায় ২ হাজার ৭১ হেক্টর নতুন বৃক্ষ–আচ্ছাদিত এলাকা তৈরি হয়েছে। একই সময় কমেছে ৯ হাজার ২৭১ হেক্টর এলাকা। সে অর্থে সবুজ এলাকা কমেছে মোট ৭ হাজার হেক্টরের মতো।
বিশেষ করে শহরের উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ ও জলাভূমির চারপাশ, রাস্তার দুপাশে এখনো অনেক গাছ লাগানোর সুযোগ আছে বলে উল্লেখ করেছেন গবেষণা দলের অন্যতম প্রধান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, গাছ রোপণের ক্ষেত্রেও প্রজাতিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এমন প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে, যার নিচে ঘাস ও লতাগুল্ম জন্মে। যেমন আকাশমণি, মেহগনি, রাবার, বেনজিন প্রজাতির গাছ এ দেশের মাটি, পানি ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ ধরনের গাছ তাপমাত্রা কমানো বা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা কম রাখে। যদি দেশি প্রজাতির ও ফলের গাছ লাগানো বেশি হয়, তবে তা খাদ্যের জোগান ও তাপমাত্রা কমানো—দুই ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারবে।