সংবাদে বলা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এত বেশি পরিমাণে অর্থ ঢুকেছে যে দেশটির নীতিপ্রণেতা, রাজনীতিবিদ এবং এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বেইজিংয়ের নীতিপ্রণেতারাও নড়েচড়ে বসেছেন।
মার্কিন ডলারের তেজ পরিমাপের সবচেয়ে সহজ পথ হচ্ছে ইউএস ডলার ইনডেক্স। বিশ্বের আরও ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান নিরূপণ করতে এই সূচক প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে এই সূচকের মান এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে যে ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকের পর তা কখনোই আর এই উচ্চতায় ওঠেনি। পরিণামে জাপানি ইয়েনের মান এখন গত ৩৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন; ইউরো ও কানাডীয় ডলারের মান পড়ছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা চেষ্টাচরিত্র করেও ইউয়ানের দুর্বলতা কাটাতে পারছে না।
এ বাস্তবতায় মুডিস অ্যানালিটিকসের অর্থনীতি জেসি রজার্স বলেছেন, ফেড যে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এখনকার মতো তা আর কখনো এতটা সত্য হয়ে ধরা দেয়নি।
ডলারের মান বাড়লে অর্থনীতিতে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে। বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক লেনদেন হয় ডলারে। ফলে ডলারের মান বাড়লে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে থেকে পণ্য আমদানির ব্যয় যেমন বাড়ে, তেমনি তেলের মতো পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়। যেসব দেশ ডলারে ঋণ দিয়েছে, তাদের ঋণ পরিশোধ আরও ব্যয়বহুল হয়ে যায়। যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে, তাদের সুবিধা হয়। ডলারের বেশি দর পাওয়ার পাশাপাশি মার্কিন নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে যে অপ্রত্যাশিত উচ্চ হারের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, তার মধ্য দিয়ে ধারণা করা হয় যে মূল্যস্ফীতি মূল সমস্যা নয়। মার্কিন অর্থনীতি চাঙা হলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও গতি আসে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির হার কমে এলে এবং এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী থাকলে আর তার সঙ্গে নীতি সুদহার ওপরের দিকে থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।