15.2 C
New York

টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়েই বাঁচতে চাই

Published:

টাঙ্গাইলের শাড়িগুলো এখন মূলত মেশিনে করা হয়। রূপগঞ্জের জামদানি হাতে বোনা হয়।

প্রথম আলো :

জামদানি শাড়িতে অনেকেই বাড়তি কিছু যোগ করেন। এটিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

আমার কাছে বিষয়টি ভালো লাগেনি, এ কারণে আমি সেটা করিও না। জামদানির একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। সেটা কেন নষ্ট করব? সারা বিশ্বের কাছে এটা আমাদের সম্পত্তি। এর ওপর কেন বাড়তি কাজ করব।

টাঙ্গাইলে তৈরি করা জামদানি শাড়ি
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

প্রথম আলো :

আজ থেকে ৫০ বছর পর আমাদের দেশের তাঁতে বোনা কাপড়ের ভবিষ্যৎ কী?

নতুন প্রজন্ম তাঁতে বসছে না। ৫০ বছর পর জামদানি পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ আছে। হাতে টাকা চলে এলে এই কাজ আর কেউ করতে চাচ্ছে না। আমি যখন কাজ শুরু করি, তাঁরা সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দিতেন। বেশ নিয়মের মধ্য দিয়েই পারিবারিকভাবে কাজটি করা হতো।

প্রথম আলো :

আমাদের এখানে কি ভালো মানের সুতা পাওয়া যায়?

আমাদের দেশে ১০০ কাউন্টের সুতা পেতেই অনেক কষ্ট করতে হয়। তাঁতিদের ১০০ কাউন্টের সুতা ব্যক্তিগতভাবে আমাদের পৌঁছে দিতে হয়। এখানকার বাজার মনে করে মোটা সুতার চাহিদা বেশি। এ কারণে বেশি কাউন্টের সুতা সহজলভ্য নয়। খুব ভালো কাপড়গুলোয় ১০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হয়। অনেক শাড়িতে একদিকে ১০০, আরেক দিকে ৮৪ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া ৭৪ কাউন্ট, ৭০ কাউন্টের সুতার কম দামি শাড়িও বানানো হচ্ছে। টাঙ্গাইলে ৫০০ টাকার শাড়িও যেমন পাওয়া যায়, আবার ৫০ হাজার টাকার শাড়িও পাওয়া যায়। শাড়ির দাম কমে-বাড়ে কারিগরদের মজুরির ওপর ভিত্তি করে।

টাঙ্গাইলের পাথরাইলে প্রতিদিনই তৈরি করা হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন নতুন শাড়ি
ছবি: কবির হোসেন

প্রথম আলো :

একটা জামদানি শাড়ি কিনতে গেলে বেশ কয়েক হাজার টাকা থেকে লাখ টাকাও লাগে। এটা কি কমিয়ে আনা সম্ভব? চাইলেও অনেকে কেন জামদানি শাড়ি কিনে পরতে পারেন না?

জামদানি বানানোর উপকরণের দাম খুব কম। দামি শাড়ির জন্য ১ হাজার টাকার বেশি উপকরণ লাগে না। কিন্তু কত দিন ধরে সেটা বানানো হচ্ছে, সেটার ওপর দাম নির্ধারণ হয়। এরপর আছে কারিগরদের মজুরি। একজন ওস্তাদ, আরেকজন শাগরেদ থাকে। এরপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) যোগ হয়। এ কারণে দাম বেড়ে যায়। দিনপ্রতি এখন কারিগরদের মজুরি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। যাঁরা দক্ষ, তাঁরা ৭০০ টাকা করে পান। অন্যরা ৬০০ টাকা করে।

আমি পুরোনো জামদানি থেকে নকশা বের করি। তারপর এটাকে নতুন সেটআপে বসাই। টাঙ্গাইলে সিনথেটিক দিয়ে জামদানির মোটিফে শাড়ি তৈরি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা বুঝতে পারেন না। জামদানির নকশা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা ভালো না। মোটিফের তো অভাব নেই। জামদানির নকশা দিতে মানা করি।

Related articles

Recent articles

spot_img