১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত যাদের জন্ম, তারাই ‘জেন-জি’। জেন-জিদের বয়স এখন ১২ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। স্মার্ট ফোন পকেটে নিয়ে বড় হওয়া এই প্রজন্মের যোগাযোগ ও অভিব্যক্তি প্রকাশের ভাষা একটু অন্য রকমই। কাজেই তাদের প্রতিবাদের ধরনও ভিন্ন হওয়ারই কথা।
সংগীত সব সময়ই যুদ্ধ, সংঘাত ও সংকটে আশা ও সংহতির প্রতীক হয়ে ওঠে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের দৌরাত্ম্যের এই সময়ে সংগীত কী ভূমিকা রাখছে? জনপ্রিয় সংগীত নিয়ে কাজ করা সাংবাদিক ও লেখক ব্র্যাড শ্রিবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, সামাজিক মাধ্যমের কারণে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের হাতে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা এখন বিভিন্ন বিষয়ে, যেমন ইউক্রেনে যা ঘটছে, তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারে। এবং এমন সব শিল্পীরা সাধারণভাবে যাদের কোনো রাজনৈতিক চেতনা থাকার কথা নয়।
শ্রিবার মূলত বলতে চাইছেন একটা সময় ছিল যখন নির্দিষ্ট কিছু শিল্পীর কাছ থেকেই রাজনৈতিক চেতনাসমৃদ্ধ সংগীত আশা করা হতো। যেমন মার্কিন শিল্পী বব ডিলান কিংবা নিনা সিমোন, ব্রিটিশ শিল্পী স্টিং কিংবা আইরিশ রক ব্র্যান্ড ইউটু, বাংলাদেশের আজম খান বা ফকির আলমগীরের কথাই ধরা যাক। কখনো গানের কথায় রাজপথে আগুন ঝরিয়েছেন, কখনো বৈষম্য ও বিভেদের যাতনার শীতল স্রোত বইয়েছেন মেরুদণ্ড দিয়ে। ক্ষমতাসীনের সরাসরি বিরুদ্ধাচরণ কিংবা বিপক্ষে যাওয়ার দায়ে অনেক গান নিষিদ্ধও হয়েছে। সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেই তাঁরা গান গেয়েছেন, শ্রোতাদের কাছে পৌঁছেছেন এবং যাঁরা তাঁদের অবস্থানের সঙ্গে সাযুজ্য বোধ করেছেন, তাঁদের কণ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। স্মার্টফোন হাতে প্রতিটি মানুষের কাছে অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার মতো হাতিয়ার রয়েছে। প্রতিবাদের ভাষা তাই হতে হবে সহজ ও অনুভূতিপ্রবণ, যা দ্রুত সর্বজনীন হয়ে উঠতে পারে। রাজনীতির জটিল মারপ্যাঁচ ছাপিয়ে তাই টম ওডেলের প্রেমের গান হয়ে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার অস্তিত্বের জানান দেওয়ার সংগীত।