28.7 C
New York

খোলা চুলার ধোঁয়ায় ঘরে বায়ুদূষণ কতটা ক্ষতিকর

Published:

বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী

বাংলাদেশে প্রতি ১০টি বাড়ির মধ্যে ৯টি বাড়িতেই খোলা চুলায় গতানুগতিকভাবে রান্না করা হয়। ফলে বাংলাদেশে এটি একটি মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা। শুধু ঘরের ভেতরের বায়ূদূষণের কারণে প্রতিবছর মোট মৃত্যুর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ঘটছে। এরূপ চুলায় রান্নার সময় বাতাসে যে ছাই বা ক্ষুদ্র দূষক কণার সৃষ্টি হয়, সেগুলো নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে যায় এবং সব রক্ত সংবহনতন্ত্রে পরিবাহিত হয়। আবদ্ধ বা কম খোলামেলা ঘরে এসব দূষক কণার আধিক্য অনেক সময় গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি থাকে।

ঠিক এক বছর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বায়ুদূষণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে উল্লেখ করা হয়, উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণ বাংলাদেশের মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকা নগরের বায়ুদূষণ রোজ জনপ্রতি ১ দশমিক ৬টি সিগারেটের ধূমপানের সমান। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু সাত বছর কমে যাচ্ছে। বায়ুদূষণের শিকার হয়ে প্রতিবছরই বেশি হারে মানুষ মরছেন। সব সময়ই গণমাধ্যমে শুধু ঘরের বাইরের বায়ুদূষণ নিয়ে সংবাদের শিরোনাম করা হয়; কিন্তু ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণে বছরে যে ঠিক কত লোক মারা যাচ্ছে, তার খবর কেউ প্রকাশ করে না। ডব্লিউওইচওর হিসাবে, ঘরের বায়ুদূষণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ১৩ হাজার ২০২ জনের মৃত্যু হয়ে থাকে। ( দ্য ডেইলি স্টার, ৪ জুন ২০২২)।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশন্যাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ জার্নালে ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ঘরের ভেতরে খোলা চুলায় রান্নার কারণে সেখান থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অতি সূক্ষ্ম কণা, কার্বন মনোক্সাইড ও কার্বন ডাই–অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফার ডাই–অক্সাইড, বেনজিন, বিউটাডাইন, ফরমালডিহাইড, পলিঅ্যারোমেটিক হাইড্রো-কার্বনসহ অনেক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বায়ুদূষণ ঘটায়। এ কারণে ২০১২ সালে বিশ্বে প্রায় ৪৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ খোলা চুলায় রান্না করেন বলে গবেষণায় দেখা যায়। ফলে মোট রোগীর মধ্যে ৩ দশমিক ৬ শতাংশের রোগের জন্য এসবই দায়ী।

Related articles

Recent articles

spot_img