সংবাদমাধ্যমের কাজ বিশ্লেষণাত্মক, যুক্তিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক সহনশীল সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করা। কারণ, গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন তথ্যসমৃদ্ধ জনসমাজ। একটি বিশ্লেষণাত্মক সমাজ গড়া না গেলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে কোথা থেকে? ক্ষমতা ও শাসন চোখে চোখে রাখা সাংবাদিকতার প্রধান কাজ। কারণ, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ব্যবহার ও অপব্যবহার এক জনস্বার্থমূলক বিষয়।
অনেকের কাছে সাংবাদিকতা এখন একটি উপলক্ষমাত্র। বিত্তবৈভব, ক্ষমতা অবস্থান ধরে রাখার বিশেষ কৌশল। সমকালীন সাংবাদিকতার ক্ষয়-ক্ষরণ কারও অদেখা বা অজানা নয়? অরুন্ধতী রায় যেমনটি বলেন, ‘একবার কেউ কিছু দেখে ফেললে, তাকে অদেখা বানানো যায় না।’ ঠিক একইভাবে একবার কেউ কিছু শুনে ফেললে, তাকেও না-শোনা করা যায় না।
সাংবাদিকেরা ক্ষমতার কেন্দ্রে গিয়ে কী করেন, মানুষ তা দেখছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এক প্রশ্নহীন সময় পার করছে। এ প্রশ্ন হলো ক্রিটিক্যাল প্রশ্ন, মানের প্রশ্ন। সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, প্রশ্ন করার সক্ষমতা ও সাহস। ক্ষমতার সঙ্গে সখ্যপ্রিয়তার কারণে মান প্রশ্ন আসছে না, বরং আসছে স্তুতি ও স্তুতির কোরাস।
সাংবাদিকতার জন্য প্রিসিশন সেন্স বা সূক্ষ্মবোধ থাকতে হয়। অল্পকথায় নির্ভুলভাবে মূল প্রশ্নটি বা ইস্যু উপস্থাপন করতে হয়। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করতে সময় বেশি ব্যয় করেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্ন গুলিয়ে ফেলেন, আগাম প্রস্তুতি থাকে না। ক্ষমতার কাছাকাছি গেলেই একশ্রেণির সাংবাদিকের মধ্যে বিগলিত ভাব চলে আসে। সাফাই গান। অথবা এমন প্রশ্ন করেন, যার ভেতর প্রত্যাশিত উত্তর থাকে। সাংবাদিকতার ধারণা যথেষ্ট পোক্ত না হলে ক্ষমতার তাপ সাংবাদিকদের নির্বিষ করবেই। অনেকে নির্বিষ হয়ে পড়ছেন।