17.9 C
New York

কুকিদের অশান্তিময় এক বছর, সশস্ত্র জগৎ ও ইতিহাসের নতুন অধ্যায় 

Published:

মণিপুর ও বান্দরবানের তুলনায় চিন প্রদেশের জোরা ভিন্ন ধাঁচের এক সময় পার করছে। পাহাড়ি প্রদেশটির কুকি-চিনরা বহুকাল প্রকৃত স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম করছে। দেশটির প্রধান জাতিসত্তা বামারদের সঙ্গে পেরে উঠছিল না তারা। ২০২১ থেকে যখন গণতন্ত্রের প্রশ্নে মিয়ানমারে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের সুযোগ নেয় কুকি-চিনদের বড় একাংশ। চিন প্রদেশের অনেকখানি মুক্তাঞ্চলও বানিয়েছে তারা।

ভারত সীমান্তবর্তী স্থলবন্দরগুলো অনেকটাই এখন সশস্ত্র চিনদের দখলে। সংবিধান, প্রশাসন, বিচার ও শিক্ষাব্যবস্থাও গড়ে তুলেছে নিজেদের ভাবনাচিন্তায়। চিন প্রদেশ এভাবে দ্রুত ‘চিনল্যান্ড’ হয়ে যাচ্ছে। গত ডিসেম্বরে ‘চিনল্যান্ডে’র প্রথম রাজনৈতিক সম্মেলন হলো ঐতিহাসিক শহর ক্যাম্প ভিক্টোরিয়ায়।

মিয়ানমারে জান্তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ (এনইউজি)–এর নেতারাও বেশির ভাগ চিনল্যান্ডে থাকেন এখন। চিনল্যান্ড ন্যাশনাল ফ্রন্ট (চিএনএফ) এবং এনইউজি রীতিমতো চুক্তি করে রাজনৈতিক সম্পর্ক পাতিয়েছে।

সংখ্যাগুরু জাতির সঙ্গে সংখ্যালঘু জাতির প্রতিনিধিদের এ রকম চুক্তি এ অঞ্চলে এই প্রথম। এতে তাঁরা উভয়েই লাভবান হচ্ছেন। মিয়ানমারে গণতন্ত্রের সংগ্রাম বিজয়ী হলে চিন-বামার ওই চুক্তির চূড়ান্ত সুফল দেখা যাবে। চিনের রাজনীতিবিদ এল এইচ সেখং এনইউজির হয়ে পুরো মিয়ানমারের জন্য নতুন সংবিধান লিখছেন।

চিনে জো জাতির ভেতর বেশ কটি উপশাখা রয়েছে। ৪০টির মতো ভাষায় কথা বলেন এখানকার পাহাড়ের মানুষ। স্থানীয় নানান বিষয়ে এদের দ্বন্দ্ব-বিবাদও আছে এবং সব জো চিনল্যান্ড কাউন্সিলে যুক্তও হননি। কিন্তু এই মুহূর্তে সাধারণভাবে তাঁরা সবাই বেশ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছেন। 

এই জোরা এখন মিজোরাম ও বান্দরবানের সঙ্গে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যও করতে চাইছেন। বিষয়টি আশপাশের কোনো কোনো দেশের জন্য অস্বস্তিকর। কারণ, চিন-মিজোরাম-বান্দরবানজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিন্ন রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্যও আছে। অর্থনীতি যে অনেক সময় রাজনীতি ও ধর্মকেও তার বিকাশে সঙ্গে নেয়, সেটি অসত্য নয়।

Related articles

Recent articles

spot_img