২০২৩ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এক মিছিলে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নেতৃত্ব দেওয়ার ছবি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এই ‘বীরত্ব’ প্রদর্শন শেষ পর্যন্ত তাঁকে দলের কাছে আরও গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছিল কি না জানি না, তবে তিনি কর্মী-সমর্থকদের সামনে ‘সিন্দুকে রাখার জন্য বন্দুকের লাইসেন্স করি নাই’—এই দম্ভোক্তি করেছেন কোনো রাখঢাক ছাড়াই।
এত কিছুর পরও যখন দলের মনোনয়ন বোর্ড মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা নিশ্চিত করে, তখন তিনি যে ধরাকে সরা জ্ঞান করবেন, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং এবার নির্বাচনে তাঁর তৎপরতা শুরু হয়ে গেল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকেই। আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে বিরাট দলবল নিয়ে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলেন মোস্তাফিজ।
বিনা বাধায় তা জমা দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিক-আলোকচিত্রীর ভিড় থেকে এক নিরীহ সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, এত কর্মী-সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করলেন কি না। ব্যস, আর যায় কোথায়, ছুটে গেলেন তিনি সাংবাদিকের দিকে। সাংবাদিককে মারতে উদ্যত তাঁর সেই রুদ্রমূর্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহুল প্রচার পেয়েছে। এ সময় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরাও নির্বিকার ছিল না, তারাও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়েছে। ধাক্কা দিতে দিতে পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নিচে রাস্তায় নামিয়ে এনেছে।
সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে মামলা হয়েছে। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু ক্ষমা প্রার্থনা তো দূরে থাক, এ ঘটনার জন্য উল্টো সাংবাদিকদের বাড়াবাড়ি বা পক্ষপাতমূলক আচরণকে দায়ী করেছেন তিনি।