20.7 C
New York

অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল, অভ্যুত্থানেই পুরো পরিবারসহ খুন হলেন আফগান প্রেসিডেন্ট দাউদ খান

Published:

বিরোধীরা দাউদ খানকে একজন কর্তৃত্ববাদী শাসক মনে করেন, যিনি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রকে উৎখাত করে আফগানিস্তানে শুরু গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত করেছিলেন।

১৯৬৪ সালের সংবিধানের মাধ্যমে রাজা জহির শাহ আফগানিস্তানকে একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৬৫ ও ১৯৬৯ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছিল। পরপর দুই দফায় দেশটিতে নির্বাচিত পার্লামেন্টের অধীন সরকারে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন প্রধানমন্ত্রী, যাঁরা রাজপরিবারের সদস্য ছিলেন না। পুরোপুরি না হলেও ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক এক পরিবেশের দিকে যাচ্ছিল আফগানিস্তান। পুরো অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশে যখন কর্তৃত্ববাদী শাসকদের জয়জয়কার, তখন আফগানিস্তানে এ ঘটনা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।

এসব কারণে গুলাম নবী মোহাম্মদির মতো ইতিহাসবিদেরা দাউদ খানের অভ্যুত্থানের পেছনে ক্ষমতা দখলের মতলবকেই বড় করে দেখেন। দাউদ খানের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়কালের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, রাজনৈতিক দল ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের বিরোধী ছিলেন দাউদ খান।’

তবে দাউদ খানের সমর্থকদের মত ভিন্ন। তাঁদের মতে, দাউদ খান ছিলেন জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ একজন নেতা, যিনি আফগানিস্তানকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তাঁর মূল চাওয়া ছিল গণতান্ত্রিক আফগানিস্তান।

ইতিহাসবিদ হাবিবুল্লাহ রাফির মতে, দাউদ খান আফগানিস্তানকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেছিলেন বৈচিত্র্যপূর্ণ আফগান সমাজে রাষ্ট্রক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করাই লক্ষ্য থেকে। তাঁর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভ বা জন-অসন্তোষ তৈরি না হওয়া এটাই প্রমাণ করে যে তাঁর প্রতি সমাজের বড় একটা অংশের সমর্থন ছিল।

হাবিবুল্লাহ রাফির মতে, দাউদ খান এমন গণতন্ত্র চেয়েছিলেন, যেখানে প্রত্যেকের ক্ষমতায়ন হবে। আফগানিস্তানে ধীরে ধীরে এমন এক গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে, যেখানে জনগণ তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে পারবেন। একই সঙ্গে দেশের জনগণের চাওয়া অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হবে, কারও একক ইচ্ছায় নয়।

Related articles

Recent articles

spot_img