20.6 C
New York

হুমায়ুন ফরীদি: এক কিংবদন্তির কথা

Published:

নব্বইয়ের গোড়া থেকেই হুমায়ুন ফরীদির বড় পর্দার পথচলা শুরু হয়। বাণিজ্যিক আর বিকল্প ধারা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ছবি তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’। এরপর তাঁর অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘সন্ত্রাস’, ‘বীরপুরুষ’, ‘দিনমুজুর’, ‘লড়াকু’, ‘দহন’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’ (১৯৯৫), ‘আঞ্জুমান’(১৯৯৫), ‘দূর্জয়’ (১৯৯৬), ‘বিচার হবে’ (১৯৯৬), ‘মায়ের অধিকার’ (১৯৯৬), ‘আনন্দ অশ্রু’(১৯৯৭), ‘শুধু তুমি’ (১৯৯৭), ‘পালাবি কোথায়’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘ব্যাচেলর’ (২০০৪), ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪), ‘রূপকথার গল্প’ (২০০৬), ‘আহা!’ (২০০৭), ‘প্রিয়তমেষু’ (২০০৯), ‘মেহেরজান’ (২০১১) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। নেগেটিভ-পজিটিভ; অর্থাৎ নায়ক-খলনায়ক—দুই চরিত্রেই তিনি ছিলেন সাবলীল, এককথায় ভার্সেটাইল। একসময় মানুষ আর নায়ককে নয়, এক ভিলেনকে দেখতেই হলে যেতেন। সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী খলনায়ক ফরীদি। প্রায় দেড় দশক তিনি দর্শকদের চুম্বকের মতো সিনেমা হলে আটকে রাখেন। ২০০৩ সালের পর সিনেমা প্রায় ছেড়ে দিলে দর্শকও হল বিমুখ হতে শুরু করেন। তাঁর অভিনীত শেষ সিনেমা ‘এক কাপ চা’ ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। নাটকে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি মেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মাননা। আর ২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবিতে সেরা অভিনেতা হিসেবে পান ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে কিছুদিন অতিথি শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করেন।
আমরা যাঁরা নব্বই দশকের সিনেমার দর্শক, তাঁরা যেন ফরীদির একটু বেশিই ভক্ত। রেডিওতে তখন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কণ্ঠে  সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমার কথা শুনতাম। মাঝেমধ্যে হুমায়ুন ফরীদির ডায়ালগ শোনানো হতো। রেডিওতে ফরীদির নাম শুনলেই কান উৎকর্ণ হয়ে উঠত। নিকটবর্তী হলে সেই সিনেমা এলেই হামলে পড়তাম। মনে পড়ছে, একটি সিনেমায় অসংখ্যবার ফরীদির সংলাপ ছিল, ‘আরে মাফ দে রে মাফ দে, লাশের মাফ দে’। ভিলেন হিসেবে কোনো শত্রুর চেহারা মনে পড়লেই চোখ দুটি কাচের গুলির মতো ঘুরাতেন আর খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে হাসতে বলতেন, ‘আরে মাফ দে রে…।’ অসংখ্য সিনেমার ডায়ালগ মনে পড়ছে, কিন্তু তা লেখার মতো যথেষ্ট পরিসর কোথায়।

Related articles

Recent articles

spot_img