সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হিজড়া শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়া হয়। তবে দুটি কারণে বেশির ভাগ হিজড়া শিক্ষার্থী ভাতার সুবিধা পান না। প্রথমত, অভিভাবকেরা সন্তানের হিজড়া পরিচয় লুকিয়ে রাখেন।
দ্বিতীয়ত, পরিবার ও সমাজের নানা বাধার শিকার হয়ে হিজড়া শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ছেড়ে দেন। হিজড়া শিশুদের ঝরে পড়া ঠেকাতে কিংবা মূলধারার শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। এর বাইরেও সমস্যা আছে।
হিজড়া শিক্ষার্থীরা সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন এবং তাঁদের উপযোগী পরিবেশ নেই। যেমন হুইলচেয়ার ব্যবহার করা শিক্ষার্থীর জন্য র্যাম্প দরকার, তেমনি হিজড়া শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা শৌচাগার দরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়াদের কোটায় ভর্তির সুযোগ রাখা হয়েছে; তবে চিন্তা করা হয়নি এ ধরনের শিক্ষার্থী ভর্তি হলে তাঁদের কোন আবাসিক ব্যবস্থায় রাখা হবে।
হিজড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চিকিৎসা ও সম্পত্তির অধিকারের প্রয়োজনীয়তার কথা সরকারও স্বীকার করেছে। তবে ফলপ্রসূ একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরি করার জন্য নির্ভরযোগ্য ভিত এখনো সমাজে তৈরি হয়নি। ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের এমন কিছু সত্যিকার মানুষের ছবি ও নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।
এই ছবিগুলো ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য যেন ব্যতিক্রম বা বিশেষ উদাহরণ না হয়, সে প্রচেষ্টা থেকেই পাঠটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে আইন বা নীতিমালা তৈরি করেও কাজের কাজটি হবে না।
● তারিক মনজুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক