জলবায়ু পরিবর্তন যে ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা থেকে রক্ষা পেতে ভবিষ্যতের জন্য কোনো কিছু ফেলে রাখার কোনো অবকাশ নেই বলে মনে করেন নরওয়ের আবহাওয়া দপ্তরের জলবায়ু বিভাগের প্রধান হ্যান্স অলিভ হাইজেন। ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে বলে জানান তিনি।
গবেষণায় পাওয়া তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরে হ্যান্স অলিভ হাইজেন বলেন, রাজশাহীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাপপ্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। ভবিষ্যতে বৃষ্টির সময়ও কমে আসতে পারে। হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। এমন বৈরী পরিস্থিতি কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের জন্য শঙ্কার বিষয়।
শুধু গবেষণার পরিসংখ্যান নয়, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার প্রভাব প্রতিনিয়ত টের পাচ্ছেন বলে জানান অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন ফাতিমা আকতার। তিনি বলেন, ‘এর প্রভাব আমাদের কৃষি এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর পড়ছে। আমাদের খাদ্যনিরাপত্তা, অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে ভবিষ্যতে।’ এসব মোকাবিলায় কর্মপন্থা নির্ধারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই গবেষণা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলে মনে করেন তিনি।
গবেষণায় তাপমাত্রার পরিবর্তন বুঝতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩৫টি স্টেশনের ১৯৮০ থেকে ২০২০ সালের প্রতিদিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ঋতুতে তাপমাত্রার পরিবর্তনের দিকটি উঠে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, ক্রমেই জলবায়ু পরিস্থিতি উষ্ণ হচ্ছে। সব ঋতুতেই তাপমাত্রা আগের চেয়ে বাড়ছে।
ঢাকার তাপমাত্রার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ৪০ বছরে দেখা গেছে প্রাক্–বর্ষা, বর্ষা ও বর্ষা-পরবর্তী—তিন সময়েই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৯, শূন্য দশমিক ৩৩ এবং শূন্য দশমিক ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। শুধু শীতকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে গেছে শূন্য দশমিক ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে চারটি কালেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েছে।
দেখা গেছে ঢাকাসহ আট বিভাগেই বর্ষাকালে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েছে। এর মধ্যে খরাপ্রবণ রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে, শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিবহুল সিলেটেও এ সময় তাপমাত্রা বেড়েছে একই রকম মাত্রায়। ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রামে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির এ হার ছিল শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।