২০০০ সালে মিলেনিয়াম সিড ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। সারা বিশ্বে এমন ব্যাংক আছে প্রায় ১ হাজার ৭০০টি। এসব ব্যাংকে শুধু বীজ নয় গবেষকেরা ডিএনএ থেকে শুরু করে মানুষের নানা জৈবিক তথ্য, মলের নমুনা পর্যন্ত সংরক্ষণ করছেন। পুরো বিষয়টিকে নুহ (আ)-এর বিখ্যাত সেই নৌকার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। সেই আমলে নৌকা ছিল কাঠের, আর এখন এখন নৌকা হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যম। ব্রেম্যান বলেন, মিলেনিয়াম সিড ব্যাংকের মতো বিভিন্ন ব্যাংক মানুষসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিলুপ্তি ঠেকাতে বিমার মতো কাজ করছে। আমাদের গ্রহের দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করছে এসব ব্যাংক। রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের প্রতিবেদন বলছে, প্রতি পাঁচটির মধ্যে দুটি উদ্ভিদ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। শিল্পের বিকাশ, কৃষি-চাষ, বন উজাড়সহ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তনে বিলুপ্তির ঘটনা ঘটছে। আক্ষরিক অর্থে আমরা যে অক্সিজেন শ্বাস হিসেবে নিই তার একমাত্র উৎস কিন্তু নানা ধরনের উদ্ভিদ। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এই গাছ দরকার। এ ধরনের ব্যাংক বা সিন্দুকের ধারণা গত শতাব্দীর ২০ দশকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। রাশিয়ার উদ্ভিদবিদ নিকোলাই ভ্যাভিলভ সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি ব্যাংক স্থাপন করেছিলেন। সেটি আজও বিদ্যমান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদের ২৮ মাসের অবরোধের মুখে পড়লেও ব্যাংকটির ক্ষতি হতে দেননি বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর শেষ সময় আসছে কি না বলা যাচ্ছে না, কিন্তু এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক কার্যকর ভূমিকা রাখছে। মিলেনিয়াম বীজ ব্যাংক এরই মধ্যে মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া এবং মেক্সিকোতে নানাভাবে তৃণভূমি পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে। বিজ্ঞানী ভ্যাভিলভের সংগৃহীত বীজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সোভিয়েত ইউনিয়নে ফসল পুনরুদ্ধার করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
উদ্ভিদ ও প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করবে জৈব ব্যাংক
previous post