এহসানূর রহমান: আমি আগেই বলেছি, ২০২৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুগান্তকারী ২০ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশেও বাস্তবায়ন হবে।
২০২৬, ২০২৮ ও ২০৩০ সালে অক্সিজেন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিটি দেশকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্রকে একটি অক্সিজেন রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করবে, তা–ও স্পষ্ট করতে হবে। বাজেট তৈরির সময় বলতে হবে সরকার কত দেবে, বেসরকারি খাত থেকে কত এবং দাতাদের কাছ থেকে কত অংশ আসবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল লাগবে। এই কমিটি বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে অক্সিজেন সুরক্ষায় অর্থ বিনিয়োগের আহ্বান জানাবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আগে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারলে প্রস্তাবিত তহবিল থেকে সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবে দুই ধরনের গবেষণার কথাও বলা হয়েছে। চাহিদা ও প্রাপ্যতার মধ্যে পার্থক্য বের করতে হবে। দ্বিতীয়ত, উদ্ভাবন বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। অক্সিজেন প্রস্তুতি, অক্সিজেন–স্বল্পতা নিরূপণ, অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা, অক্সিজেন ব্যবহার বিষয়ে নানাবিধ উদ্ভাবন হতে পারে। কোভিডের সময় আমরা আইসিডিডিআরবি ও বুয়েটের বিভিন্ন উদ্ভাবন দেখেছি। আইসিডিডিআরবির বাবল সিপাপ অনেক কার্যকর ও সাশ্রয়ী।
ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ কমিশন মেডিকেল অক্সিজেন সুরক্ষা নিয়ে বিশেষ কাজ করছে। সেই কাজের সঙ্গে আমি ও আইসিডিডিআরবি শুরু থেকে যুক্ত। কমিশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি হবে, তাতে মেডিকেল অক্সিজেনের মোট চাহিদা আর কোথায় কী ঘাটতি আছে, তার উল্লেখ থাকবে। বৈশ্বিকভাবে অক্সিজেন বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উপায় কমিশন ঠিক করবে। এ ছাড়া প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ে একটি মঞ্চ তৈরি করবে।
এ ছাড়া নতুন মানদণ্ড নির্ধারণে গবেষণা চলছে। এখন যেসব অক্সিমিটার ব্যবহার হয়, সেসবের ট্রায়াল হয়েছে শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর। কালো বা গাঢ় বাদামি ত্বকের মানুষের অক্সিজেন পরিমাপে এসব অক্সিমিটার সঠিক তথ্য দেয় না। অক্সিমিটারের এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে কাজ চলছে।
মেডিকেল অক্সিজেনের ৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধতা প্রয়োজন, নাকি আরও কিছুটা কম হলেও মানুষ একই সুফল পাবে, তা নিয়েও গবেষণা হচ্ছে।